Thursday, January 31, 2019

স্ট্রোক কী? স্ট্রোকে কী করনীয়?

রোগব্যাধি

হঠাৎ স্ট্রোক করে মারা যাওয়ার ঘটনা খুব কমন আমাদের দেশে । এই স্ট্রোক নিয়ে তথ্যবহুল ও উপকারী একটা লেখা পেলাম, পড়ে দেখতে পারেন, কাজে দিবে।

স্ট্রোক কি?
ব্রেইনের রক্ত সরবরাহ যখন কোন কারনে বিঘ্নিত হয় তখনই স্ট্রোক হয়। বিশেষ করে রক্ত নালী ব্লক হয়ে কিংবা রক্তনালী ছিড়ে ব্রেইনের এই রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয় । রক্তে থাকে অক্সিজেন আর পুষ্টিগুন । ব্রেইন টিস্যুর খাদ্য হল এই অক্সিজেন আর পুষ্টিগুন । ফলে অক্সিজেনের অভাবে ব্রেইন টিস্যুগুলো মারা যায়। স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারন উচ্চরক্তচাপ!

স্ট্রোকের ভয়াবহতা:
সারাবিশ্বে স্ট্রোকে মৃত্যুর তৃতীয় কারণ ব্রেইন স্ট্রোক। বাংলাদেশে স্ট্রোকে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সারাবিশ্বে প্রতি ৬ জনে একজন স্ট্রোক করে। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধতার সবচেয়ে বড় কারণ স্ট্রোক ।

স্ট্রোকের টাইপ :
সিডিসি (CDC= Center for disease control and prevention) এর মত অনুযায়ী ব্রেইন স্ট্রোক তিন ধরনের।
১. ইশকেমিক স্ট্রোক (Ischemic stroke): মস্তিষ্কের রক্তনালীর ভিতরে রক্ত জমাট (blood Clot) বেধে গেলে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে ব্রেইনের কিছু টিস্যূ অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। এটাই ইশকেমিক স্ট্রোক। বেশির ভাগ স্ট্রোকই ইশকেমিক স্ট্রোক!
২. হেমোরেজিক স্ট্রোক (Haemorrhagic Stroke): মস্তিষ্কের কোন রক্তনালী ছিঁড়ে গেলে এই ধরনের স্ট্রোক হয়!
৩. ছোট স্ট্রোক (Mini Stroke or Transient Ischemic Stroke - TIA): মস্তিষ্কের রক্তনালীতে অস্থায়ীভাবে অল্প কিছু সময়ের জন্য রক্ত জমাট বেধে এই স্ট্রোক সৃষ্টি করে; যেটা দ্রুতই আবার ভাল হয়ে যায়।

কি কি কারনে স্ট্রোক হতে পারেঃ
অনেকগুলো রিস্ক ফ্যাক্টর আছে, যেগুলো থাকলেই মূলত স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবনা অনেক অনেক বেড়ে যায় । এই রিস্ক ফ্যাক্টর গুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১। কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যেগুলো আমরা কখনই নিয়ন্ত্রন করতে পারি না:
বয়স (age): বয়স বাড়ার সাথে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে থাকে, এটা আমরা নিয়ন্ত্রন করতে পারি না ।
লিঙ্গ (gender) : স্ট্রোক পুরুষদেরই বেশি হয়ে থাকে ।
২। মেডিকেল রিস্ক ফ্যাক্টর: কিছু কিছু মেডিকেল কন্ডিশন (সমস্যা) আছে যেগুলোর কারনে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় ।

ট্রানজিয়েন্ট ইশকেমিক এটাক (TIA – Transient Ischemic Attack ): এটা স্ট্রোকের মতই, এর ফলে এক হাত পা এবং মুখের এক পাশ প্যারালাইসিস হয়ে যায়। আবার দ্রুত ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আগের মত ভাল হয়ে যায়। এটাকে আমরা মিনি স্ট্রোক বলতে পারি । এই মিনি স্ট্রোককে খুব সাবধানে নিতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসক দেখাতে হবে । কারন মিনি স্ট্রোক বড় স্ট্রোকের বার্তা দিয়ে যায় ।

অনিয়মিত হার্টবিট (Irregular pulse – Atrial fibrillation ): অনিয়মিত হার্টবিট স্ট্রোকের সম্ভবনা কে অনেকগুন বাড়িয়ে দেয় । তাই এটাকে চিকিৎসক দেখিয়ে চিকিৎসা করানো জরুরি ।

ডায়বেটিস (Diabetes ) : ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে না পারলে স্ট্রোকের সম্ভবনা অনেক গুন বেড়ে যায় ।

ফাইব্রোমাস্কুলার ডিসপ্লাসিয়া (FibroMuscular Dysplasia -FMD): এটাও স্ট্রোকের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়!

অথেরোস্ক্লেরোসিস (Atherosclerosis) : সিংহভাগ ইশ্চকেমিক স্ট্রোকের বড় কারণ এই অথেরোস্ক্লেরোসিস। কোলেস্টেরল, উচ্চরক্তচাপ এবং অধিক বয়সজনিত কারণে এই অথেরোস্ক্লেরোসিস হয়ে থাকে।

৩। লাইফ স্টাইলগত কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর: যেইগুলো আপনি নিজেই নিয়ন্ত্রন করতে পারেন:
[] উচ্চরক্তচাপ 
[] উচ্চমাত্রার কোলস্টেরল 
[] ধূমপান 
[] অতিরিক্ত ওজন 
[] চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহন 
[] শারিরীক প্ররিশ্রম না করা 
[] অনেক বেশি অলকোহল পান করা

স্ট্রোকের লক্ষণসমূহঃ
→ হঠাৎ করে প্রচণ্ড মাথা ব্যথা
→ হঠাৎ করে চোখে দেখতে সমস্যা (এক চোখ বা দুই চোখ) 
→ হঠাৎ করে তন্দ্রাচ্ছভাব হওয়া, হাঁটতে সমস্যা হওয়া ।
→ হঠাৎ করে করে কনফিউশন হওয়া এবং কথা বলতে অসুবিধা হওয়া ।
→ শরীরের এক পাশ হাত এবং পা অবশ হয়ে যাওয়া ।

স্ট্রোকের লক্ষণ সমূহ সহজে মনে রাখতে FAST শব্দটি মাথায় রাখুন
F = face, মুখ এক পাশে বেকে যায়
A = Arm, এক পাশে হাত পা অবশ হয়ে যেতে পারে
S = Speech, কথা বলতে অসুবিধা হবে ।
T = Time to call

উপরের লক্ষণ সমূহ দেখলেই কল দিতে পারেন 01787152872 (তথ্যের জন্য) এবং নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন ।

স্ট্রোক প্রতিরোধের নিয়ম সমূহঃ
ল্যানসেটের গবেষনা অনুযায়ী ৯০% স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য । তাই আসুন নিজে স্ট্রোক প্রতিরোধ করি এবং অন্যকে সচেতন করি ।

১। উচ্চরক্তচাপঃ উচ্চরক্তচাপ স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারন । বছরে দুইবার অন্তত রক্তচাপ চেক করুন । রক্তচাপ বেশি হলে আপনার নিকটবর্তী হেলথ কেয়ার প্রফেশনালের সাথে যোগাযোগ করুন ।

২। আর্টিয়াল ফিব্রিলেশনঃ আর্টিয়াল ফিব্রিলেশন এক ধরনের অনিয়মিত হার্টবিট , যেটা স্ট্রোক ঝুঁকিকে ৫গুন বাড়িয়ে দেয় । দ্রুত আপনার হেলথ কেয়ার প্রফেশনালের সাথে যোগাযোগ করেন ।

৩। ধূমপান পরিহার করুনঃ ধূমপানের কারনে পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুন বেড়ে যায়।

৪। উচ্চ কোলস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করুনঃ রক্তনালীতে উচ্চমাত্রার কোলস্টেরল ব্রেইনের রক্তনালীতে রক্ত প্রবাহ ব্লক করে দিয়ে পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এবং হার্ট এটার্কের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় । আপনার চিকিৎসকের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করে চিকিৎসা নিন।

৫। ডায়বেটিসঃ ডায়বেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির স্ট্রোক ঝুঁকি ৪ গুন বেশি যাদের স্ট্রোক নেই তাদের চেয়ে । তাই ডায়বেটিস থাকলে ডায়বেটিস চিকিৎসকের পরামর্শমত চলবেন ।

৬। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খানঃ নিয়মিত কম চর্বিযুক্ত , কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খাবেন।

৭। মেডিসিনঃ মেডিসিন প্রেসক্রাইভ করা হয় স্ট্রোক রিকভারী এবং স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য। গবেষনায় দেখা গেছে অধিকাংশ স্ট্রোক আক্রান্ত রোগী ৩ মাসের মধ্যে মেডিসিন খাওয়া বন্ধ করে দেয় । আর এই গ্রুপের লোকজন পুনরায় স্ট্রোক আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি ।

৮। ব্যায়াম করুনঃ গবেষনায় দেখা গেছে যারা প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করে তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক অনেক কম। শারীরিক কোন সমস্যা থাকলে অবশ্যই ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম থাকবেন।

বার বার স্ট্রোক কিভাবে প্রতিরোধ করবেনঃ
বার বার স্ট্রোক ( Recurrent stroke)! প্রতিরোধ আপনার হাতে....
স্ট্রোক হয়েছে মানে আপনার পুনরায় স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি সাধারনের চেয়ে ৪ গুন বেশি। প্রথম স্ট্রোক হওয়ার ৫ বছরের মধ্যে পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি ৪০% বেড়ে যায় ।
তবে আশার কথা হলো আপনি চাইলে ৮০% পুনরায় স্ট্রোক ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে পারেন শুধু মাত্র লাইফ স্টাইল এবং মেডিসিনের মাধ্যমে ।

পুনরায় স্ট্রোকে মৃত্যু ঝুঁকি আগের চেয়ে অনেক অনেক বেশি এবং পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস) এর হারও অনেক বেশি । কারন মস্তিষ্কের কিছু অংশ ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত, পুনরায় স্ট্রোক মানে মস্তিষ্কে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ।
আপনার প্রথমবার স্ট্রোক হওয়ার কারণগুলো বের করুন আপনার হেলথ কেয়ার প্রফেশনালের সাথে কথা বলে।

ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে The best defense is good offense , স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সেটা The best defense against recurrent stroke is good offense. অর্থাৎ ভালভাবে কারনগুলো প্রতিরোধ করতে পারলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার কোন সুযোগই নেই।

নিম্নে পুনরায় স্ট্রোক ( Recurrent Stroke) প্রতিরোধের উপায় গুলো দেওয়া হল:
১। ধূমপান পরিহার করুনঃ ধূমপানের কারনে পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুন বেড়ে যায় ।
২। উচ্চরক্তচাপঃ উচ্চরক্তচাপ স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনযোগ্য (modifiable risk factor) । উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি দেড় গুন বেশি হয়ে থাকে ।
৩ । মেডিসিনঃ মেডিসিন প্রেসক্রাইভ করা হয় স্ট্রোক রিকভারী এবং স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য। গবেষনায় দেখা গেছে অধিকাংশ স্ট্রোক আক্রান্ত রোগী ৩ মাসের মধ্যে মেডিসিন খাওয়া বন্ধ করে দেয় । আর এই গ্রুপের লোকজন পুনরায় স্ট্রোক আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি ।
৪ । উচ্চ কোলস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করুনঃ রক্তনালীতে উচ্চমাত্রার কোলস্টেরল ব্রেইনের রক্তনালীতে প্রবাহ ব্লক করে দিয়ে পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এবং হার্ট এটার্কের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ।
৫। ডায়বেটিসঃ ডায়বেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির স্ট্রোক ঝুঁকি ৪ গুন বেশি যাদের স্ট্রোক নেই তাদের চেয়ে ।
৬। আর্টিয়াল ফিব্রিলেশনঃ আর্টিয়াল ফিব্রিলেশন এক ধরনের অনিয়মিত হার্টবিট , যেটা স্ট্রোক ঝুঁকিকে ৫গুন বাড়িয়ে দেয় । দ্রুত আপনার হেলথ কেয়ার প্রফেশনালের সাথে যোগাযোগ করেন ।
৭। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খানঃ নিয়মিত কম চর্বিযুক্ত , কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খাবেন ।
৮। ফিজিওথেরাপি নিনঃ স্ট্রোকের পরে সপ্তাহে কয়েকদিন ফিজিওথেরাপি বা নিয়মিত ব্যায়াম করলে পুনরায় স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক অনেক কম ।

স্ট্রোকের চিকিৎসা :
স্ট্রোকের লক্ষনসমূহ বুঝার সাথে সাথে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। ৩ ঘন্টার মধ্যে চিকিৎসা দিতে পারে ৩১% রোগী ভাল হয়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরতে পারে।

ল্যানসেটের গাইডলাইন অনুযায়ী যত দ্রুত সম্ভব ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শুরু করা জরুরি।
একটু স্ট্যাবল হলে পুরোপুরি পূর্নবাসন চিকিৎসা শুরু করা দরকার। নিউরোলজিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, অকুপেশনাল থেরাপিস্ট, স্পীচ থেরাপিস্ট, ফিজিশিয়ান, নার্স সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সঠিক পূর্নবাসনের মাধ্যমে স্ট্রোক রোগীর সর্বচ্ছো উন্নতি সম্ভব।

ধন্যবাদ 
ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি 
পরিচালক, বাংলাদেশ স্ট্রোক ফাউন্ডেশন।

ভালো থাকুন | School of Awareness

স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কী করবেন? জেনে রাখুন জরুরী কিছু সতর্ক বার্তা!

প্রজন্ম

বিয়ের আগে পরিবার পরিজন, আত্মীয় স্বজন সংক্রান্ত যাবতীয় খোঁজ খবর নিয়ে থাকি আমরা, কিন্তু ভুলে যাই সব চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাপার স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ সংক্রান্ত ব্যাপার টি, আসুন জেনে নেয়া যাক এই বিষয়ে জরুরী কিছু তথ্য।

স্বামী-স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ কেমন হওয়া উচিত?

সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার আগে প্রথমে আমাদের ব্লাড গ্রুপ সম্পর্কে কিছু কথা জানা দরকার। প্রধানত রক্তের গ্রুপকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটা হল ABO system (A, B, AB & O), আরেকটা হল Rh factor {Rh positive(+ve) & Rh negative(-ve)}. অর্থ্যাৎ Rh factor ঠিক করবে ব্লাডগ্রুপ পজেটিভ হবে না নেগেটিভ হবে।

তাহলে ব্লাড গ্রুপগুলো হলঃ A+ve, A-ve, B+ve, B-ve, AB+ve, AB-ve O+ve, O-ve.জেনে নেয়া যাক, যদি অন্য গ্রুপের ব্লাড কারো শরীরে দেয়া হয় তাহলে কী হবে?

যখন কোনো Rh নেগেটিভ গ্রুপের ব্যক্তিকে Rh পজেটিভ গ্রুপের ব্লাড দেয়া হয় তখন প্রথমবার সাধারণত কিছু হবে না। কিন্তু এর বিরুদ্ধে রোগীর শরীরে এন্টিবডি তৈরি হবে যার ফলে যদি কখনো রোগী আবার পজেটিভ ব্লাড নেয় তাহলে তার ব্লাড cell গুলো ভেঙ্গে যাবে, এর কারণে অনেক সমস্যা হবে। যেমন জ্বর, কিডনি ফেইলিউর, হঠাৎ মৃত্যু ইত্যাদি।

এই সমস্যাকে মেডিকেল টার্ম এ বলা হয় ABO incompatibility.স্বামী-স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ কী রকম হওয়া দরকার? স্বামীর ব্লাডগ্রুপ যদি পজেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ ও পজেটিভ হতে হবে।

আর যদি স্বামীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ পজেটিভ বা নেগেটিভ যে কোনো একটি হলেই হবে। তবে স্বামীর ব্লাডগ্রুপ যদি পজেটিভ হয় তাহলে কোনোভাবেই স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হওয়া চলবে না। এক্ষেত্রে যদি স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে তার স্বামীর ব্লাডগ্রুপ ও নেগেটিভ হতে হবে।যদি স্বামীর ব্লাডগ্রুপ পজেটিভ হয় আর স্ত্রীর ব্লাডগ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে কী সমস্যা হবে?

রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কোন সমস্যা হয় না। তবে স্ত্রী যদি নেগেটিভ হয় আর স্বামী যদি পজিটিভ হয় তাহলে ‘লিথাল জিন’ বা ‘মারন জিন’ নামে একটি জিন তৈরি হয় যা পরবর্তীতে জাইগোট তৈরিতে বাঁধা দেয় বা জাইগোট মেরে ফেলে। সে ক্ষেত্রে মৃত বাচ্চার জন্ম হয়। যদি স্বামীর ব্লাডগ্রুপ পজেটিভ হয় তাহলে সাধারণত বাচ্চার ব্লাডগ্রুপ ও পজেটিভ হবে। যখন কোনো নেগেটিভ ব্লাডগ্রুপের মা ধারন করবে পজেটিভ Fetus(ভ্রুন) তখন সাধারনত প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।

কিন্তু ডেলিভারির সময় পজেটিভ Fetus এর ব্লাড, placental barrier ভেধ করে এবং placental displacement এর সময় মায়ের শরীরে প্রবেশ করবে।মায়ের শরীরে ডেলিভারির সময় যে ব্লাড প্রবেশ করবে, তা ডেলিভারি হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই মায়ের শরীরে Rh এন্টিবডি তৈরি করবে। যখন মা দ্বিতীয় সন্তান বহন করবে, তখন যদি তার fetus এর ব্লাডগ্রুপ পুনরায় পজেটিভ হয়। তাহলে মায়ের শরীরে আগে যেই Rh এন্টিবডি তৈরি হয়েছিলো সেটা placental barrier ভেধ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। আর যখন fetus এর শরীরে Rh antibody ঢুকবে তখন fetal এর RBC এর সঙ্গে agglutination হবে, যার ফলে RBC ভেঙ্গে যাবে। একে মেডিকেল টার্ম এ “Rh incompatibility” বলে।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

স্ত্রী দেহের বিকৃতির কারণ ও প্রতিকার


বিয়ের বছর পরেই স্ত্রীর দেহগঠন আগের মতো নেই? জেনে নিন কী ভুল করছেন প্রতিদিন!

নারীর দেহগঠন নষ্ট হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে যৌনাঙ্গ স্থায়ীভাবে প্রশস্ত হওয়া একটি। যেসব কারণে নারীর যৌনাঙ্গ স্থায়ীভাবে প্রশস্ত হয়ে যায়, সেগুলো হলো:

১. অতিমাত্রায় যৌনমিলন : জীবনের তাগিদে অনেক সময় অপরিণত বয়সে অনেকেই ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় বিয়ের আগে এক বা একাধিক পুরুষের সঙ্গে মিলিত হয়ে থাকে এবং মাত্রাতিরিক্ত যৌনমিলনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেকেই আবার বিয়ের আগে একাধিকবার এমআর করে থাকে, যার কারণে যৌনাঙ্গ অকালেই প্রসারিত হয়ে যায়। ফলে দাম্পত্য জীবনের শুরুতেই নানাবিধ জটিলতা দেখা দেয়।

২. অপরিণত বয়সে যৌনমিলন : আমাদের সমাজে বাল্যবিবাহ একটি বহুল প্রচলিত সামাজিক সমস্যা। বাল্যবিবাহে সাধারণত ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেয়া হয়। বয়স কম থাকার ফলে এই বয়সী মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক পরিপক্বতা লাভ করে না এবং অপরিপক্ব বয়সে দৈহিক মিলনের ফলে নারীর যৌনাঙ্গ বা যোনীপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। এতে পরিণত বয়সে পুরুষ সঙ্গীটি যৌনমিলনে আর স্বাভাবিক তৃপ্তি পায় না। ফলে দাম্পত্য জীবনে পারিবারিক কলহ, বিবাহবিচ্ছেদ, পরকীয়া প্রেমের মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।

৩. নরমাল ডেলিভারি : নরমাল ডেলিভারিতে স্বাভাবিকভাবেই নারীর প্রসবের রাস্তা বড় হয়ে যায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যায়। তা ছাড়া বড় মাথার বাচ্চা বা উল্টো ডেলিভারির (Breech Delivery) বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চার জীবন বাঁচানোর জন্য পেরিনিয়াল মাংসপেশি কাটতে এপিসিওটমি (Episiotomy) অপারেশন করাতে হয়, যা সেলাই করার পরও আগের মতো স্বাভাবিক হয় না। এর ফলে নারীর যৌনীপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং দুর্বল মাংসপেশির জন্য প্রসবের রাস্তা স্থায়ীভাবে প্রশস্ত হয়ে যায়।

৪. প্রিসিপিটেট লেবার : ডেলিভারিতে ডেলিভারি-প্রক্রিয়ার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ দুই ঘণ্টার চেয়ে কম সময়ে সম্পূর্ণ হয়, ফলে সারভাইকাল টেয়ার (সারভিক্স ছিলে যাওয়া), থার্ড ডিগ্রি পেরিনিয়াল টেয়ার (ভেজাইনাল টিস্যু, পেরিনিয়াল স্কিন, পেরিনিয়াল মাংসপেশি থেকে শুরু করে পায়ুপথের মাংস পর্যন্ত ছিঁড়ে যায়)। সাধারণত সেলাই করার পরও আগের মতো স্বাভাবিক হয় না, ফলে নারীর যৌনীপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রসব-পরবর্তী সময়ে প্রসবের রাস্তা স্থায়ীভাবে প্রশস্ত হয়ে যায়।

৫. প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা (Urinary incontence in Female) : নিম্নাঙ্গের মাংসপেশি দুর্বলতার কারণে অনেক নারীই প্রস্রাব ধরে রাখতে পারে না। নরমাল ডেলিভারিতে যোনীপথের মাংসপেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মূত্রথলি ওপর থেকে নিচে নেমে আসে এবং মূত্রথলির স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে হাঁচি-কাশিতে প্রস্রাব বের হয়ে যায়, এমনকি বাথরুমে যাওয়ার আগেই ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব পড়তে থাকে।

৬. স্বল্প সময়ে বারবার অদক্ষ হাতে এমআর ও ডিঅ্যান্ডসি করানো : আমাদের সমাজে বহুগামিতা থেকে শুরু করে নানাবিধ ত্রুটিপূর্ণ যৌন আচরণের ফলে অগণিত নারী নীরবে অসুন্দর ও প্রশস্ত যোনীপথের সমস্যায় দিনাতিপাত করছে। এ-জাতীয় সমস্যার কারণে নারী যখন তার সঙ্গীকে সঠিকভাবে যৌনসুখ দিতে পারে না, তখন পুরুষেরা তার সাথে সম্পর্ক ছেদ করতেও সামান্য দ্বিধাবোধ করে না।

এত দিন যাবৎ এ সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো উপায় না থাকায় নারীদেরকে নীরবে মুখ বুজে কষ্ট সহ্য করতে হত। বর্তমানে লেজার সার্জারির মাধ্যমে কোনো ধরনের কাটা-ছেঁড়া ছাড়াই স্বল্প সময়ে সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে। নারীর প্রশস্ত হয়ে যাওয়া যোনীপথকে নিরাপদে সংকুচিত করে যৌবনের আটসাট গঠন ফিরিয়ে দেয়ার অত্যাধুনিক চিকিৎসা লেজার ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি (Laser Vaginoplasty ) এখন বাংলাদেশেই হচ্ছে।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

প্যান্টের পকেটে মোবাইল ফোন রাখার ক্ষতিকর দিক!

অভ্যাস

পকেটে মোবাইল রেখে নিজের কতটা ক্ষতি করছেন জানেন?

বেশির ভাগ মানুষই মোবাইল ফোনটিকে রেখে দেন প্যান্টের পকেটে। এভাবে মোবাইল ফোনটি পকেটে রাখলে মানব শরীরে যে ক্ষতি হয়, সে বিষয়টি অনেকেরই অজানা।

পকেটে মোবাইল ফোন রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এর তড়িৎ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের প্রভাবে মানুষে শরীরের স্নায়ুতন্ত্র ও প্রজনন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনটাই দাবি করেছে রাশিয়ার একদল গবেষক। ভারতীয় বেশ কিছু গণমাধ্যম এমন খবর প্রকাশ করেছে।

লিগ অব নেশন হেলফ অর্গানাইজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রাশিয়ার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নিকোলাই কনোরোভ সম্প্রতি মোবাইল ফোন পকেটে রাখার ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, বর্তমানের মানুষ যতটা তড়িৎ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের বিকিরণের শিকার হয় এর ৭০ শতাংশই ঘটে নিজের মোবাইল ফোন থেকে। আর বিভিন্ন গবেষণায় এটি প্রমাণিত, এমন বিকিরণের প্রতি মানুষের শরীর প্রতিক্রিয়াশীল।

গবেষকদের মতে, তড়িৎচৌম্বকীয় ক্ষেত্রের বিকিরণের প্রাথমিক শিকার হয় মানুষের স্নায়ুতন্ত্র। এ ছাড়া প্রজনন অঙ্গও এমন বিকিরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তড়িৎচৌম্বকীয় ক্ষেত্র সবেচেয়ে বেশি করে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের। নিকোলাই কনোরোভ অবশ্য স্বীকার করেছে মোবাইল ফোনসেটের তড়িৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের বিকিরণে মানব শরীরের ওপর ক্ষতি নিয়ে বিস্তারিত কোনও গবেষণা হয়নি। তবে এটি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, মোবাইল ফোনসেট ব্যবহারের অন্তত কিছুটা সতর্কতা মানা উচিত।

স্বাস্থ্য বিশেষক ওয়েবসাইট হেলদিফুডহাউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল ফোন হাতে বা ব্যাগে রাখা এবং স্বল্পতম সময়ে কথা শেষ করার মাধ্যমে তড়িৎ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের ক্ষতি অনেকাংশেই কমানো যায়।

(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Wednesday, January 30, 2019

স্বামী-স্ত্রীর যে ১১টি ভুলে সন্তান হয়না সারাজীবন!

প্রজন্ম

বয়স বাড়ার সঙ্গে নারীর সন্তান ধারণ ক্ষমতা প্রাকৃতিকভাবেই খানিকটা কমে আসে। শুধু তা-ই নয়, জীবনযাপনের আরো কিছু বিষয় সন্তান ধারণক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। চলুন বিস্তারিত জেনে নিই:

১. অতিরিক্ত ওজন:
অতিরিক্ত ওজন সন্তান না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। এটি শরীরের হরমোনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে এবং নারীর সন্তান ধারণ ক্ষমতাকে অত্যন্ত জটিল করে তোলে। এর ফলে নারীর জরায়ুর কার্যক্ষমতাও হ্রাস পায়। ২০০৯ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, ১৮ বছর বয়সের যেসব নারী ওজনাধিক্যের সমস্যায় রয়েছেন, তাঁরা জরায়ুর বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হন এবং তাঁদের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যায়।

২. রুগ্ন শরীর:
অতিরিক্ত ওজন যেমন সন্তান ধারণ ক্ষমতা হ্রাস করে, তেমনি খুব বেশি পাতলা হওয়াও ক্ষতিকর। বেশি চিকন হলে নারীর দেহে ল্যাপটিন হরমোনের অভাব হয়। এই হরমোন ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরে এই হরমোনের ঘাটতি হলে ঋতুচক্রের সমস্যা হয়। তাই গবেষকদের মতে, উচ্চতা এবং ওজনের সামঞ্জস্য বজায় রাখুন। সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন ঠিক রাখুন। এটি নারীর বন্ধ্যত্ব দূর করতে সাহায্য করে।

৩. বয়স বেশি হওয়া:
যখন নারীর ঋতুচক্র স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, তখন সে আর সন্তান ধারণ Child capacity করতে পারে না। ঋতুচক্র একবারে বন্ধ হয়ে যাওয়াকে মেনোপজ বলে। তবে যদি মেনোপজের ঠিক আগের পর্যায়ে শরীরে ইসট্রোজেন বা প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যায় বা একদমই নিঃসৃত না হয়, তখন তাকে পেরিমেনোপজ বলা হয়। মেনোপজ হয় সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। ৪৫ বছরের আগেই পেরিমেনোপজ হতে পারে। তাই অধিকাংশ চিকিৎসকের মতে, ৩৫ বছরের আগে সন্তান নেওয়া উচিত। এর পরে সন্তান ধারণক্ষমতা কঠিন হয়ে পড়ে।

৪.বংশগত কারণ: গবেষকদের মতে, যদি পরিবারে দেরিতে সন্তান ধারণের ইতিহাস থাকে, তবে আপনারও দেরিতে সন্তান হতে পারে।

৫. মানসিক চাপ: গবেষকদের পরামর্শ, যেসব নারী সন্তান নিতে চাইছেন, তাঁদের চাপ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি শেখা খুব জরুরি।

৬. মদ্যপান: গবেষকদের পরামর্শ, যদি আপনি সন্তান নিতে চান, তবে অবশ্যই মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন।

৭. বেশি ব্যায়াম: ব্যায়াম করা আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং শক্তি দেয়। যখন আপনি সন্তান নিতে চাইবেন, এটি খুব জরুরি। তবে আপনি যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন, এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যাঁরা দিনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি ব্যায়াম করেন, তাঁদের এ আশঙ্কা থাকে।

৮. থাইরয়েড সমস্যা:
থাইরয়েডজনিত কোনো সমস্যা হলেও সন্তান ধারণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।

৯. ক্যাফেইন: যাঁরা দিনে পাঁচ কাপের বেশি কফি পান করেন, তাঁদের এ সমস্যা হয়। তাই সন্তান নিতে চাইলে কফিপান কমিয়ে দেওয়ার পক্ষেই মতামত গবেষকদের।

১০. যৌন সমস্যা: যৌন বাহিত রোগের কারণেও সন্তান ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। যেমন : সিফিলিস, গনোরিয়া, প্রদাহ ইত্যাদি।

১১. স্বাস্থ্যগত সমস্যা: বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যার ফলে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। পলিসাইটিক ওভারি সিনড্রোম, সিস্ট, এনডোমিটট্রিওসিস—এসব বিষয় অনেক সময় নারীর বন্ধ্যত্বের জন্য দায়ী।

(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

জেনে নিন মাংস কতদিন ফ্রিজে রাখবেন

খাদ্য

কুরবানীর মাংস কি এখনও ফ্রিজে রেখে দিয়েছেন? ফ্রিজের মাংস কতো সময় ফ্রিজে রাখা যায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সাধারণত সবাই চায় কুরবানির মাংস অনেকদিন সংরক্ষণ করে ধীরে ধীরে খেতে। কিন্তু পুষ্টি গবেষকদের মতে, এতে নানান সমস্যা রয়েছে। বেশি দিন মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বজায় থাকে না।

ফ্রিজে গরুর মাংস তিন থেকে থেকে চার মাস আর খাসির মাংস দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত রেখে দেয়া যেতে পারে। এর বেশি রাখলে সেই মাংসের আর কোনো কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। তবে কলিজার বেলায় এই সময়টা আবার ভিন্ন। কলিজা বেশিদিন ফ্রিজে না রাখাই ভালো। এতে স্বাদ একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ফ্রিজে মাংস রাখার আগে মাংস ধুয়ে নিয়ে পানি ভালোমতো ঝরিয়ে রাখুন। এতে মাংস অনেকদিন ভালো থাকবে। মাংস রাখার জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি চর্বিসহ মাংসগুলো আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন।

মাংস ফ্রিজে রাখার পর ফ্রিজের দরজা খুব বেশি একটা না খোলাই উচিত। এতে ভিতরের ঠাণ্ডা হাওয়া বের হয়ে যেতে পারে। যার ফলে মাংস নরম থেকে যাবে।

অনেকেই বার বার ঝামেলার ভয়ে রান্না করা মাংস ফ্রিজে রেখে দেন। এক্ষেত্রে রান্না মাংস ছোট ছোট বক্সে রাখুন। প্রত্যেকবার বড় বক্স বের করে গরম করা এবং অল্প একটু খেয়ে বাকিটুকু আবার রেখে দিলে মাংসের স্বাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

মাংস ফ্রিজে রাখার আগে মার্কার দিয়ে পলিথিনের প্যাকেটে তারিখ লিখে রাখুন। এতে মাংস কতোদিন ধরে ফ্রিজে আছে তা সহজেই বের করতে পারবেন।

(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

যে ৮টি খারাপ অভ্যাস আপনার বুদ্ধি কমিয়ে দিচ্ছে!

অভ্যাস

প্রতিদিন আমরা কত কাজ করি। কিছু বিষয় আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। আমরা হয়ত কখনো খেয়াল করি না এই অভ্যাসগুলো কিভাবে আমাদের দক্ষতাকে কমিয়ে দিচ্ছে। আসুন জেনে নিই এমন ৮ টি সাধারণ অভ্যাস যার কারণে হ্রাস পাচ্ছে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা।

১। কম ঘুমানো
অনেকে সারা রাত জেগে কাজ করেন। অনেকে আবার টিভি দেখে, বই পড়ে রাত পার করে দেন। নিত্যদিনের এই রাত জাগা শুধু আপনাকে অসুস্থই করে তোলে না, একই সাথে আপনার বুদ্ধিও কমিয়ে দেয়! ১ ঘন্টা কম ঘুম আপনার বুদ্ধির মাত্রাকে ৬ ডিগ্রী থেকে কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে ৪ ডিগ্রীতে!

২। রিয়েলিটি শো
নিয়মিত যারা রিয়েলিটি শো দেখেন তাদের বুদ্ধি কমতে থাকে। অস্ট্রেলিয়ায় একটি গবেষণায় কিছু মানুষকে নেয়া হয়, যাদের এক অংশকে একটি রিয়েলিটি শো দেখতে দেয়া হয়। পরে তাদের সবার মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হলে দেখা যায় যারা রিয়েলিটি শো দেখেছে তারা বুদ্ধিভিত্তিক প্রশ্নে যারা শো টি দেখেন নি তাদের তুলনায় পিছিয়ে আছেন।

৩। চিনি
আমেরিকায় UCLA এর গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন চা, কফিতে চিনি খাওয়া বা চিনি আছে এমন পানীয় যেমন কোকাকোলা, পেপসি পান করা মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধীর করে, মনে রাখা এবং নতুন কিছু শেখার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।

৪। একসাথে কয়েকটি কাজ করা
আমরা প্রায়ই একসাথে কয়েকটি কাজ করি। এতে আমাদের বুদ্ধি হ্রাস পেতে পারে। বিশেষ করে যারা ইলেক্ট্রনিকস পণ্যে একই সাথে কয়েকটি কাজ করেন, যেমন - ফোনে কথা বলতে বলতে ক্যামেরায় ছবি তোলা। ২০০৯ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বেরিয়ে আসে এই তথ্যটি।

৫। চুইংগাম চিবানো
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ টি গবেষণার ফলাফল হিসেবে দেখা যায়, অনবরত চুইংগাম চিবানো মানুষের শর্ট টার্ম মেমরি কমিয়ে দেয়। চুইংগাম খাওয়ার পর বাচ্চাদের কাজ করতে দিয়ে দেখা গেছে, ক্রমানুসারে সাজানো এনং বস্তুকে চিনতে পারা উভয় ক্ষেত্রে তারা অন্য বাচ্চাদের তুলনায় ধীর।

৬। পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার
গবেষণায় দেখা গেছে মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার মানুষের বুদ্ধি কমিয়ে দেয়। যারা সবসময়য় পাওয়ারপয়েন্টে কাজ করেন অন্যদের তুলনায় তারা জটিল বিষয়ে চিন্তা করা বা কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে পিছিয়ে থাকেন।

৭। অতিস্থূলতা
২০১০ সালের কেন্ট স্ট্যাট বিশ্ববিদ্যালয় ১০০ জন স্থূল মানুষের উপর গবেষণা করেন। দেখা যায়, অপারেশনের আগে অতিস্থূল মানুষদের বুদ্ধির মাত্রা যা ছিল অপারেশনের ২ সপ্তাহ পর তা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে গেছে।

৮। ধূমপান
অনেকসময় দেখা যায়, কয়েকজন মিলে একটি সিগারেট পান করছেন। আবার অনেকে সিগারেটের একেবারে শেষ অংশ পর্যন্ত টান দেন। সেন্ট্রাল মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে এই অভ্যাসে বুদ্ধি লোপ পায়।

খেয়াল করুন নিজের বদভ্যাসটি। আজই বদলে ফেলুন নিজেকে। সঠিক অভ্যাস ফিরিয়ে আনবে আপনার কর্মচাঞ্চল্য।

(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

যে সাতটি কাজ আপনার আয়ু কমিয়ে দেয়!

অভ্যাস

টিভি দেখা
ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, ২৫ বছরের বেশি বয়সিরা এক ঘণ্টা টিভি, ডিভিডি বা ভিডিও দেখলে তাঁদের জীবনের আয়ু প্রায় ২২ মিনিট কমে যেতে পারে৷ সে হিসেবে কেউ যদি ধারাবাহিকভাবে দিনে গড়ে ছয় ঘণ্টা করে টিভি দেখেন, তাহলে তাঁর জীবন থেকে পাঁচটি বছর চলে যেতে পারে৷

যৌনসম্পর্ক
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের একটি গবেষণায় জানা যায়, যেসব পুরুষ মাসে কমপক্ষে একবারও যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হননি তাঁদের মারা যাওয়ার সম্ভাবনা, যাঁরা সপ্তাহে অন্তত একদিন যৌনসম্পর্ক করেছেন, তাঁদের চেয়ে দ্বিগুন৷ এদিকে, ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষণা বলছে, যেসব নারীর আনন্দময় যৌনজীবন রয়েছে তাঁরা অন্যদের চেয়ে প্রায় আট বছর বেশি বাঁচেন৷ কাজেই সুস্থ, সুন্দর জীবনের জন্য নিয়মিত যৌনসম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ বৈকি!

একা থাকা
অনেকেই একা থাকতে পছন্দ করেন৷ মনে করেন এতে করে চাপ এড়ানো যায়৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা৷ তাঁদের কথা, একা থাকা মানে জীবনের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য থেকে বঞ্চিত হওয়া – যা আয়ু কমাতে পারে৷ দিনে ১৫টি সিগারেট খেলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হয়, পর্যাপ্ত সামাজিক যোগাযোগ না করলেও সেরকম ক্ষতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন মনোবিজ্ঞানী জুলিয়ান হোল্ট-লুনস্টাড৷

বসে থাকা
অ্যামেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-এর জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, দিনে গড়ে ১১ ঘণ্টার বেশি সময় বসে থাকা মানে পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে যাওয়া৷ কাজেই আর বসে থাকা নয়, শারীরিক পরিশ্রম করুন, সুস্থ থাকুন!

বেকারত্ব
ক্যানাডার গবেষকরা বলছেন, একজন মানুষ বেকার থাকা মানে তার অকালমৃত্যুর সম্ভাবনা ৬৩ শতাংশ বেড়ে যাওয়া৷ ১৫টি দেশের প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষের ৪০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা৷

ঘুমানো
দিনে আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ঘুমানো ঠিক নয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁরা বলেন, ধারাবাহিকভাবে এত সময় ধরে ঘুমানো স্বাস্থ্যকর নয়৷ দিনে সর্বোচ্চ সাত ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷

অতিরিক্ত ব্যায়াম
ব্যায়াম করা শরীরের জন্য উপকারী৷ কিন্তু সেটা বেশি হয়ে গেলেই বিপদ৷ তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ব্যায়াম করা উচিত৷

(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

হার্ট অ্যাটাকের পরে ভুলেও করবেন না এই ৭টি কাজ!

অভ্যাস


হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাক সাধারণ আর দশটি রোগের মত নয়। খুব সাধারণ কিছু লক্ষণ থেকে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। আবার কোন লক্ষণ ছাড়াও হয়ে যেতে মাইনর হার্ট অ্যাটাক। একবার হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেলে রোগীকে একটু বেশি সচেতন থাকতে হয়। কারণ এরপরের বার মেজর অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর পরিবর্তন করতে হয় লাইফ স্টাইল, ত্যাগ করতে হয় কিছু অভ্যাস।

১। ধূমপান
আপনি যদি অধূমপায়ী হয়ে থাকেন, তবে এটি আপনার জন্য নয়। ধূমপান হৃদযন্ত্র থেকে যে রক্ত প্রবাহিত হয়, তার প্রভাবিত করে থাকে এবং এর সাথে ধমনী ব্লক করে থাকে। তাই হার্ট অ্যাটাকের পরে অতি দ্রুত ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন।

২। পরিপূর্ণ এবং ট্রান্স ফ্যাট
ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এই খাবারগুলো ধমনীর গায়ে দেওয়াল তুলে দেয় এবং হৃদযন্ত্রে রক্ত পৌঁছাতে বাঁধা দিয়ে থাকে। জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৩। চিনি এবং লবণ
চিনি এবং চিনি জাতীয় খাবার যেমন চকলেট, পেস্ট্রি, মিষ্টি খাবার কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে। যা রক্ত ঘন করে রক্তনালী বন্ধ করে দেয়। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে হার্টের রোগীদের লবণ একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত খাওয়া উচিত। তারদের প্রতিদিন ১৫০০ মিলিগ্রামের নিচে লবণ খাওয়া উচিত।

৪। কোলেস্টেরলের মাত্রা
বিশেষজ্ঞদের মতে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করোনেরি অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে থাকে। কোলেস্টেরলের মাত্রা ১৮০ এমজি তে রাখার চেষ্টা করুন। কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি করে এমন খাবার যেমন মাখন,ঘি, তেল ইত্যাদি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৫। শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে যাওয়া
অনেকেই হার্ট অ্যাটাকের পরে শারীরিক পরিশ্রম অথবা ব্যায়াম এড়িয়ে চলেন। কিন্তু হালকা ব্যায়াম করা হার্টের জন্য ভাল। আপনি প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে পারেন। তা হতে পারে সাইক্লেনিং, সাঁতার অথবা হাঁটা।

৬। উচ্চ রক্তচাপ
American Heart Association এর মতে উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে থাকে। রক্তচাপ ১৪০ থেকে ১৯০ এর মধ্যে থাকা উচিত। যদি এটি উঠানামা করে তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৭। অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা এড়িয়ে চলা
ডায়বেটিস বৃদ্ধি, হাইপারটেনশন, ডিপ্রেশন, হাইপোথাইরয়েডিজম ইত্যাদি সরাসরি হৃদযন্ত্রে প্রভাব ফেলে থাকে। তাই অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়।

হার্টের রোগীদের অন্য দশজনের থেকে একটু বেশি সাবধানে থাকতে হয়। ছোট একটি ভুল বা অসাবধানতা বাড়িয়ে দিতে পারে মৃত্যু ঝুঁকি।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

জেনে নিন, কারা ভুলেও আদা খাবেন না!


শরীরের নানা রোগ উপশমে আদার উপকারিতা অপরিসীম। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানো ছাড়াও, আর্থারাইটিস, মাইগ্রেন, কাশি, ডায়েরিয়া, গ্যাস, কনস্টিপেশন, হার্টের সমস্যা, ডায়বেটিস, হাই-কোলেস্টেরলের মতো বিবিধ রোগ প্রতিরোধে আদার জুড়ি মেলা ভার। এমনকি ক্যান্সারের কোষবৃদ্ধিতেও বাধ সাধে মাটির নিচের এই ফসল। রোগ প্রতিরোধে আদার উপকারিতার কথা মাথায় রেখে, বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতেও আদা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 
তবে, আদার গুণ জানার পরই যদি কেউ মুড়ি-মুড়কির মতো আদা খেতে শুরু করেন, তাহলেও সমূহ বিপদ। কারণ আদা যেমন অনেক ক্ষেত্রে শরীরের পরম বন্ধু, আবার কিছু ক্ষেত্রে তা শরীরের চরম শত্রুও বটে। তাই আদার গুণাগুণ জানার পাশাপাশি, এটা জানাটাও অত্যন্ত জরুরি যে, কারা আদার ধার-পাশ দিয়েও যাবেন না।

কারা আদা এড়িয়ে চলবেন?

১. অন্তঃসত্ত্বারা : আদা শরীরে কড়া উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। সেজন্য অন্তঃসত্ত্বারা আদা খেলে, প্রিম্যাচিওর শিশু জন্মের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এজন্য গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই আদা এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষত প্রেগন্যান্সির শেষ সপ্তাহগুলিতে তো আদা নৈব নৈব চ।

২. যাঁরা ওজন বাড়াতে চান : যাঁরা রোগা হতে চান তাঁদের জন্য আদা বিশেষ উপকারী হলেও, যাঁরা শীর্ণকায়, ওজন বাড়াতে উৎসাহী তাঁদের অবশ্যই আদা এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ আদা খিদে কমায়। এছাড়াও শরীরের চর্বি গলানোর প্রক্রিয়ায় আদা বিশেষ সহায়ক। সেজন্য যাঁরা ওজন বাড়াতে চান, আদা তাঁদের কোনও কাজে আসবে না।

৩. ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যাঁরা ওষুধ খান : আদা ডায়বেটিসের লেভেল কমাতে কার্যকরী হলেও, যাঁরা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত ওষুধ খান, তাঁদের ডায়েট চার্ট থেকে চিরতরে ডিলিট করে দিতে হবে আদাকে। একই কথা প্রযোজ্য উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যও। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান, তাঁদেরও অবশ্যই আদাকে এড়িয়ে চলা উচিত।
সূত্র: এই সময়

ভালো থাকুন | School of Awareness

শরীরে যেভাবে জীবাণু প্রবেশ করে!


সুত্র: দৈনিক "কালের কণ্ঠ"।

Note: ফটোটি সেভ করার পর ওপেন করে জুম করলে ভালো দেখতে পাবেন।

ভালো থাকুন | School of Awareness

এসব খাবার খালি পেটে খাবেন না!


খাবারগুলো সম্পর্কে জেনে নিনঃ

১. কফি/চাঃ 
খালি পেটে কফি খাওয়া খুবই ক্ষতিকর। কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন পাকস্থলির জন্য ভালো নয়। তাই খেতে হলে আগে অন্তত একগ্লাস পানি খেয়ে নিন। চা-ও কফির মতো, খালি পেটে খাওয়া ঠিক নয়। চায়ের মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় এসিড যা পাকস্থলির আবরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

২. কলাঃ 
কলাকে বলা হয় সুপার ফুড। সুস্বাদু এই ফল হজম হয় খুব সহজে। তবে কলাতে থাকা পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম খালি পেটে খেলে রক্তের ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামের সঙ্গে অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি করে।

৩. দইঃ 
দই অথবা দুধ জমিয়ে তৈরি কোনও খাবার খালি পেটে খাবেন না। এ ধরনের খাবার খালি পেটে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে যা অ্যাসিডিটি বাড়ায়।

৪. টমেটোঃ
প্রচুর পরিমাণ পেকটিন, সাইট্রিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড রয়েছে টমেটোতে যা গ্যাসট্রিক জুসের সঙ্গে বিক্রিয়ায় বদ হজমের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

৪. মশলা জাতীয় খাবারঃ 
অতিরিক্ত ঝাল ও মশলা জাতীয় খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। খালি পেটে ঝাল বা মশলা জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে থাকে, যা অ্যাসিডিটিসহ পেটে ব্যথার সৃষ্টি করে।

৪. ওষুধঃ 
গ্যাসট্রিকের ওষুধ খাওয়ার আগে খেতে বলা হয়। তবে অধিকাংশ ওষুধ ভরা পেটে খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। যখন খালি পেটে ওষুধ খাওয়া হয় এটা পাকস্থলিতে অস্বস্থিকর অবস্থার তৈরি করে।
(সংগ্রহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Monday, January 28, 2019

রাত জাগার ভয়ংকর অপকারিতা!

অভ্যাস


রাত জাগলে কী কী সর্বনাশ হতে পারে তা জেনে নিই।
ছোটকাল থেকেই আমরা এ কথাটি মোটামুটি সবাই শুনে অাসছি। তবে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় ও আমাদের পরিবর্তিত আচরণ বা অভ্যাসের কারণে এ কথাটির প্রয়োগ তেমন না থাকলেও এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য কিন্তু আমাদের উপর ঠিকই কুপ্রভাব ফেলছে।

১) মানসিক রোগঃ যারা রাতে ঠিকমত ঘুমায় না বা রাত জেগে থাকে তাদের মধ্যে বিষণ্নতা (Depression), অস্থিরতা (Anxiety), বিরক্তি (Irritability), হ্যালুসিনেশন (Hallucination) সহ নানাবিধ মানসিক রোগের বা উপসর্গের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যায়। আর যারা ইতোমধ্যে এসব রোগে ভূগছেন তাদের রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। একারণে মানসিক রোগের চিকিৎসায় ঘুমের ঔষধের প্রয়োগ বেশ দেখা যায়।
২) স্মৃতি বা মেমোরী কমে যায়ঃ আমরা সারাদিন যা শিখি বা জানি তা ব্রেনে স্থায়ীভাবে ধরে রাখতে ঘুম অপরিহার্য্য। ঘুমের মধ্যে স্মৃতির Consolidation প্রক্রিয়ায় স্থায়ীরূপ লাভ করা সহজ হয়। রাতে ঠিকমত না ঘুমালে বা অপর্যাপ্ত ঘুমালে অর্জিত তথ্য স্মৃতিতে স্থায়ীরূপ লাভ নাও করতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে রাত জাগা ও অপর্যাপ্ত ঘুমানো ছাত্রদের একাডেমিক পারফর্মেন্স যারা স্বাভাবিক ঘুমায় তাদের তুলনায় কম। এ কারণেই পরীক্ষার আগের রাতে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে পড়াশোনা করতে নিষেধ করা হয়।
৩) সতর্ক থাকার সক্ষমতা হ্রাস পায়ঃ কেউ যদি রাতে মাত্র দেড় ঘন্টা কম ঘুমায় তাহলে পরের দিন তার সতর্ক (Alertness) থাকার সক্ষমতা ৩২% কমে যায়। অসতর্কতার কারণে অনেক দূর্ঘটনাও ঘটে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব মেডিক্যাল রেসিডেন্ট (medical residents ) রাতে ৪ ঘন্টার কম ঘুমায় তারা যারা ৭ ঘন্টার বেশী ঘুমায় তাদের তুলনায় ২গুণ বেশী ভুল করে। তার চেয়েও ভয়ংকর বিষয় হলো এক জরিপে দেখা গেছে ১১.৫% এরও কম মেডিক্যাল রেসিডেন্ট প্রতিদিন রাতে ৭ ঘন্টা ঘুমান। অথচ তাদের ভুল রোগীদের জীবনের সাথে সম্পর্কিত। এ কারণে চিকিৎসা পেশার সাথে সংলিষ্ট সকলের পর্যাপ্ত ঘুমের নিশ্চয়তা বিধান করা খুবই জরুরী।
৪) সড়ক দূর্ঘটনাঃ রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়ার পরিণতিতে ড্রাইভিং এর সময় তদ্রা, মনোযোগের অভাব, বিরক্তি, স্মতি বিভ্রাটজনিত সমস্যা, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াশীলতার ঘাটতিতে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ১লক্ষেরও বেশী সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে ১৫৫০জন নিহত হয় এবং আহত হয় প্রায় ৪০,০০০ মানুষ।
৫) মেজাজজনিত সম্পর্কের অবনতিঃ রাত জাগা মানুষদের দিনের বেলায় অস্থিরতা, বিরক্তি, অস্বস্থি বিরাজ করায় এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিষন্নতা কাজ করায় কিংবা কথা ভুলে যাওয়ার প্রবণতার কারণে আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক সুস্থভাবে বজায় রাখা কঠিন হতে পারে; সেক্ষেত্রে মনোমালিন্য,কথা কাটাকাটি ও সহজেই উত্তেজিত হওয়ার কারণে নিকটজনদের সাথে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।
৬) ভুল স্মৃতি বা False Memory তৈরি হওয়া: যারা রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান না তাদের ভুল স্মৃতি তৈরি হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় অর্থাৎ যে ঘটনা ঘটেনি তার স্মৃতি তৈরি হওয়া। যেমন এক ব্যক্তি রাতে তার স্ত্রীকে হয়ত কিছুই বলেনি অথচ তিনি সকালে হৈ চৈ বাঁধিয়ে দিতে পারেন এই বলে “তোমাকে কাল রাতে বললাম না খুব সকালেই আমাকে বেরুতে হবে, কাজেই নাস্তা রেডি রাখিও"।
৭) আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়ঃ যে সকল মানসিক রোগে মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে তাদের বেশীর ভাগেরই অন্যতম উপসর্গ রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়া। গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন যেসব কিশোর কিশোরীরা রাতে ৫ ঘন্টার কম ঘুমায় তাদের বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৭১% বেশী এবং আত্মহত্যার চিন্তা ৪৮% বেশী এমন কিশোর কিশোরীদের তুলনায় যারা রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমায়। রাত ১০টার পরে ঘুমালে আত্মহত্যার সম্ভাবনা প্রায় ২০% বেড়ে যায় এমনকি ৮ ঘন্টা ঘুমালেও।
৮) হার্টের সমস্যাঃ যারা রাতে ৬ঘন্টার কম ঘুমায় তাদের উচ্চ রক্তচাপে ভোগার বা নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা খুব বেশী। তাছাড়া রাতজাগা রোগীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যায়। সাধারণ মানুষের তুলনায় রাতজাগা মানুয়ের হৃদপিন্ডের অসুখ-বিসুখের ঝুঁকি প্রায় ৪০% বেশী। Warwick medical school এর গবেষকরা বলেছেন “যদি আপনি রাতে ৬ঘন্টার কম ঘুমান এবং ঘুম ঠিকমত না হয় তাহলে অাপনার হৃদরোগ হওয়ার বা তা থেকে মারা যাওয়ার সম্ভবনা ৪৮% বেশী এবং স্টোকে আক্রান্ত হওয়া বা থেকে মারা যাওয়ার সম্ভবনা ১৫% বেশী।"
৯) ডায়াবেটিসঃ ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। অর্থাৎ নিঃসুত ইনসুলিনের প্রতি কোষের সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ায় তা ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। গবেষণায় দেখা গেছে পরপর ৪ রাত ঠিকমত না ঘুমালে ইনসুলিনের প্রতি কোষের সংবেদনশীলতা ১৬% কমে যায় যা ওজন বৃদ্ধি, প্রি-ডায়াবেটিক ও ডায়াবেটিক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় এবং নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসকে অনিয়ন্ত্রিত করতে পারে। জাপানের এক গবেষণা পত্রে দেখা যায় রাত জেগে কাজ করা শ্রমিকদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব দিনে কাজ করা শ্রমিকদের তুলনায় প্রায় ৫০% বেশী।
১০) ওজন বৃদ্ধিঃ রাত জেগে থাকলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর এই গ্লুকোজের রেসপন্সে বেশী করে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। কিন্তু রাতের বেলা মাংসপেশীর নড়াচড়া কম থাকায় বা খাদ্যের চাহিদা কম থাকায় ইনসুলিন এই গ্লুকোজকে ফ্যাট সেলে চর্বি হিসাবে জমা হতে সাহায্য করে। তাছাড়া রাত জেগে থাকলে ক্ষুধা নিবারণকারী লেপটিনের(Leptin) মাত্রা কমে যায় এবং ক্ষুধা উদ্রেককারী গ্রেলিনের (Ghrelin) মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে সামগ্রিক ক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ওজন বাড়ে।
১১) দেহের বৃদ্ধি কমে যেতে পারেঃ ঘুমের মধ্যে দেহের বৃদ্ধির জন্য দায়ী Growth Hormone এর নিঃসরণ বেশী হয় এবং এসময় দেহের বৃদ্ধির হারও বেশী থাকে। রাতের বেলা উচ্চতা বৃদ্ধির কারণেই অনেক সময় শিশুদের জয়েন্টে ব্যথা হয় (জয়েন্টের কাছাকাছি হাড়ের অংশে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী এপিফাইসিয়াল প্লেট থাকে যা বৃদ্ধির সময় ব্যথার অনুভূতি তৈরি করে)। সুতরাং যারা রাতে ঠিকমত ঘুমান না (বিশেষত শিশু ও টিনএজারদের ক্ষেত্রে) তাদের দেহের বৃদ্ধি কমে যেতে পারে।
১২) ব্রেস্ট ও ওভারীর ক্যান্সারঃ মার্কিন এক গবেষণায় জানা গেছে যেসব কর্মজীবি নারীরা রাত জেগে কাজ করেন তাদের স্তন ও ডিম্বাশয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি যারা শুধু দিনের বেলায় কাজ করেন তাদের তুলনায় যথাক্রমে ৩০% ও ৪৯% বেশী।
১৩) পেটের সমস্যাঃ যারা রাত জাগেন তাদের মধ্যে বুক জ্বালাপোড়া করা, পেপটিক আলসার, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম(IBS), ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১৪) ক্ষত সারানোঃ দ্রুত ক্ষত সারাতে (Healing) গভীর ঘুমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অাছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যারা রাতে স্বাভাবিকভাবে ঘুমায় তাদের শরীরের হিলিং প্রসেস যারা রাত জাগে তাদের তুলনায় দ্রুততর হয়।
১৫) রিপ্রডাকশন ও সেক্সঃ রাত জাগা মহিলাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা, অকালে সন্তান প্রসব, কম ওজনের সন্তান হওয়া, ব্যাথাযুক্ত মাসিক এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সন্তান না হওয়ার মত সমস্যা হতে পারে। বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা অনিয়মিত ও অপর্যাপ্ত ঘুমকে বন্ধ্যাত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসাবে বিবেচনা করছেন। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যেসব নারী-পুরুষ রাতে ঠিকমত ঘুমায় না তাদের যৌনাকাঙ্খাও (Libido) কমে যেতে পারে।
১৬) শরীর ব্যাথা ও ম্যাজম্যাজ করাঃ যাদের রাতে ঠিকমত ঘুম হয় না তাদের শরীরে ব্যাথা বা ম্যাজম্যাজ ভাব লেগেই থাকে। চিকিৎসা শাস্ত্রে শরীর ব্যাথার Fibromyalgia নামক রোগটি বা রোগটির উপসর্গের তীব্রতা রাত জাগা মানুষদের মধ্যে তুলনামূলক বেশী দেখা যায়।
১৭) ক্লান্তিবোধঃ ঘুমের মাধ্যমে দেহ বিশ্রাম নেয় পরবর্তী সময়ের জন্য দেহকে পূর্ণ কার্যক্ষম করে তোলার জন্য। কিন্তু যারা রাত জাগে এবং পর্যাপ্ত ঘুমায় না তাদের পরবর্তী দিন ক্লান্তিতে ভূগতে দেখা যায়।
১৮) মাইক্রোস্লিপ (Microsleep)-মাইক্রোস্লিপ হলো কোনরকম পূর্বাভাস ছাড়াই হঠাৎ করে কয়েক সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ডের জন্য ঘুমিয়ে পড়া এমনকি কাজ করা অবস্থায়ও। যারা রাত জাগেন এবং পর্যাপ্ত ঘুমান না তাদের মধ্যে মাইক্রোস্লিপের প্রবণতা বেশী দেখা যায়। যারা ড্রাইভিং করেন বা মেশিন চালান তাদের জন্য এ অবস্থা মারাত্মক দূর্ঘটনা ও প্রাণহানির কারণ হতে পারে।
১৯) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসঃ দীর্ঘদিন ধরে রাত জাগার কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশেষতঃ ভাইরাসজনিত রোগবালাইয়ে ভোগার সম্ভবনা বেশ বেড়ে যায়।
২০) প্রদাহ বৃদ্ধিঃ যারা রাত জেগে কাজ করেন তাদের রক্তে প্রদাহ নির্দেশক (inflammatory makers) যেমন interleukin 6 (IL-6), tumor necrosis factor-alpha (TNF-α) এবং C-reactive protein (CRP) বেশী থাকে। কোন কোন গবেষক রাতজাগাকে Low-grade chronic inflammation এর সাথে তুলনা করেছেন। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন রাত জাগাজনিত যত সমস্যা হয় তার বেশীরভাগ সমস্যার পিছনে রয়েছে এই মৃদু মাত্রায় দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ। হয়ত এ কারণেই রাতজাগাদের শরীরে জ্বর জ্বর ভাব, শরীর ব্যাথা/ম্যাজম্যাজ করা বা মাথাব্যাথা করার মত উপসর্গ প্রায়ই দেখা দেয়।
২১) মাথাব্যাথাঃ যারা রাতে ঠিকমত ঘুমান না তাদের মাথাব্যাথা হওয়ার ও মাইগ্রেনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশী দেখা যায়।
২২) মৃগীরোগ ও খিঁচুনী বেড়ে যায়ঃ গবেষণায় দেখা গেছে রাত জাগা মৃগীরোগীদের খিঁচুনীতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা রাতে স্বাভাবিকভাবে ঘুমায় এমন মৃগীরোগীদের তুলনায় বেশী।
২৩) ডার্ক সার্কেল ও ব্যাগি আইঃ যারা ক্রমাগত রাত জাগে তাদের চোখের চারপাশে কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল তৈরি হয়। কারো কারো চোখের নিচ ফুলে উঠে(Baggy eye)।
২৪) অঞ্জনি(STYE): যারা রাত জাগে বেশী তাদের চোখের পাতায় অঞ্জনি (STYE) হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।
২৫) জিনঃ মানবদেহে এমন কতকগুলো জিন অাছে যাদের কার্যকারিতা দিবরাত্রি চক্র (circadian rhythm) মেনে চলে। এদের সংখ্যা আনুমানিক প্রায় ১৫০০। রাত জাগার কারণে এসব জিন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এসব জিন ক্ষতিগ্রস্থ হলে দেহে নানা রকম জটিলতা স্থায়ীরূপ নিতে পারে।
২৬) নৈতিকতার অধপতনঃ যারা রাত জাগেন ও পর্যাপ্ত সময় ঘুমান না তাদের নৈতিকতার বিচারবোধ হ্রাস পেতে পারে। নৈতিকতার বিচারবোধ হ্রাস পাওয়ায় তার দ্বারা অহেতুক অনৈতিক কাজ সম্পন্ন হতে পারে।
২৭) অতিরিক্ত হাই তোলাঃ যারা রাত জাগেন তাদের মধ্যে দিনের বেলা অতিরিক্ত হাই তোলার প্রবণতা দেখা যায়।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

খাবার গ্রহণের সঠিক সময়!


সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করুন; জেনে নিন খাবার গ্রহণের সঠিক সময়!

খাবার সঠিক সময়ে খাওয়ার উপর নির্ভর করে লিভারের সুস্থতা, ভালো হজমক্রিয়া ও মেটাবোলিক ফাংশন। তাই সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করুন।

ভালো থাকুন | School of Awareness

Thursday, January 24, 2019

ক্যানসার থেকে বাঁচতে চান? এই ৫টি জিনিসকে বাড়ি থেকে অবিলম্বে দূর করুন।


আমরা অনেক সময়ে এমন অনেক কৃত্রিম, রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে ফেলি যেগুলো আমাদের শরীরের পক্ষে উপকারী তো নয়ই, বরং বেশ ক্ষতিকর। ডাক্তাররা বলছেন, আমাদের নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্রের এমন অনেক কিছু রয়েছে যেগুলো ক্যানসারের কারণ হতে পারে।

আধুনিক জীবনে আমরা প্রতি মুহূর্তে চেষ্টা করি আমাদেক বেঁচে থাকাকে সহজতর করার। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে গিয়ে আমরা অনেক সময়ে এমন অনেক কৃত্রিম, রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে ফেলি যেগুলো আমাদের শরীরের পক্ষে উপকারী তো নয়ই, বরং বেশ ক্ষতিকর। ডাক্তাররা বলছেন, আমাদের নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্রের এমন অনেক কিছু রয়েছে যেগুলো ক্যানসারের কারণ হতে পারে। এখানে রইল তেমনই ৫টি জিনিস হলো:

১. চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত মিষ্টি:
স্যাকারিন জাতীয় জিনিসে সরবিটল, অ্যাকেসুফ্লেম-কে, অ্যাসপারটেম প্রভৃতি উপাদান থাকে যেগুলি ক্যানসারের জন্মদাতা হিসেবে কাজ করে।

২. ননস্টিক কুকওয়্যার:
ননস্টিক কুকওয়্যারের উপরের অংশে যে কোটিং-টি থাকে সেটি স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। রান্নার সময় পাত্রটি যখন গরম হয়ে যায় তখন এই কোটিং থেকে ফ্লুওরাইড ভিত্তিক কিছু গ্যাস এবং রাসায়নিক নির্গত হয় যেগুলি কার্সিনোজেনিক, অর্থাৎ ক্যানসারের বীজ হিসেবে কাজ করে।

৩. প্লাস্টিকের বোতল ও খাবার রাখার পাত্র:
এই ধরনের জিনিস তৈরির সময় বিসফেনল-এ নামের একটি উপাদান ব্যবহার করা হয় যা প্লাস্টিককে শক্ত করার কাজে লাগে। প্লাস্টিকের বোতল ও টিফিন কেরিয়ারে যখন জল বা খাবার রাখা হয় তখন সেগুলিও এই উপাদানের সংস্পর্শে বিষময় হয়ে ওঠে। সমীক্ষার ফলে দেখা গিয়েছে, এই ধরনের পাত্রে রাখা খাবার বা জল শরীরে গেলে ক্যানসারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

৪. এয়ার ফ্রেশনার:
আমরা ঘরকে সুরভিত করার কাজে এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা থেকে দেখা গিয়েছে, এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করলে এমন কিছু গ্যাস নির্গত হয় যেগুলি সিগারেটের ধোঁয়ার থেকেও বেশি ক্ষতিকর।

৫. ঘর পরিস্কার করার উপাদান:
ঘরকে পরিস্কার রাখতে আমরা অনেকেই বাজার থেকে নানা রকমের বোতলবন্দি সাবান জাতীয় জিনিস কিনে আনি। এগুলিতে বিসফেনল-এ, ট্রাইক্লোসান, প্যারাবেন-এর মতো কিছু অত্যন্ত ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে। যখন এগুলি ঘর মোছার কাজে ব্যবহৃত হয়, তখন শরীরেও তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার পাশাপাশি ক্যানসারেরও সম্ভাবনা দেখা দেয় এগুলি ব্যবহারের ফলে।

উপরোক্ত জিনিসগুলি ব্যবহার করলেই ক্যানসার হবে, এমন কোনও কথা নেই। তবে সুস্থ থাকতে চাইলে এগুলির ব্যবহার যথাসম্ভব কমানোই উচিত।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

লিভার সুস্থ রাখতে মেনে চলুন এই পরামর্শ।


লিভার রোগ মানেই মৃত্যু : জেনে নিন লিভার ভালো রাখার উপায়

ইংরেজি ‘Liver’ শব্দটির বাংলা অর্থ ‘যকৃত’ তবে আমরা একে লিভার বললেই বেশি চিনি। মেরুদণ্ডী ও অন্যান্য কিছু প্রাণীদেহের এই অঙ্গটি প্রাণীদেহের বিপাকে ও অন্যান্য কিছু শারীরিক কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করে। গ্লাইকোজেনের সঞ্চয়, প্লাজমা প্রোটিন সংশ্লেষণ, ওষুধ বা অন্যান্য রাসায়নিক নির্বিষকরণে এর ভূমিকা অপরিহার্য।

লিভার দেহের বৃহত্তম গ্রন্থি। এটি মধ্যচ্ছদার নিচের অংশে অবস্থিত। যকৃতে পিত্ত উৎপন্ন হয়, পিত্ত একধরনের ক্ষারীয় যৌগ যা পরিপাকে সহায়তা করে, বিশেষত স্নেহজাতীয় খাদ্যের ইমালসিফিকেশন। এছাড়াও লিভার দেহের আরও বিভিন্ন জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। লিভার ২টি খন্ডে বিভক্ত,ডান এবং বাম।

লিভারের ওজনের পাঁচ থেকে দশ ভাগের বেশি চর্বি দিয়ে পূরণ হলে যে রোগটি হয় তাকে ফ্যাটি লিভার বলে। লিভারে জমা চর্বি অনেক সময় স্থানীয় প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং এ প্রদাহ থেকে কিছুসংখ্যক রোগীর লিভার সিরোসিস, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে লিভার ক্যান্সারও হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের কোনো উপসর্গ থাকে না, অন্য রোগের পরীক্ষা করার সময় সাধারণত রোগটি ধরা পড়ে। কখনো কখনো পেটের উপরিভাগের ডানদিকে ব্যাথা,অবসন্নতা, ক্ষুধামান্দ্য ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

চলুন জেনে নেই লিভার ভালো রাখার কিছু উপায়:

১. মদ্যপান হতে বিরত থাকুন কারণ যেকোনো রোগীরই অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। অ্যালকোহল নিজেই অ্যালকোহলিক লিভার সিরোসিস তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি যাঁরা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাঁদের লিভার অ্যাবসেস বা লিভারে ফোড়া হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। গবেষণায় এও দেখা গেছে যে অ্যালকোহল গ্রহণ করলে হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাসজনিত লিভার রোগের মাত্রাও অনেক বৃদ্ধি পায়। পশ্চিমা বিশ্বে সাধারণত মদ্যপানের কারণে ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে।

২. শর্করা জাতীয় খাবার কম খান শর্করা জাতীয় খাদ্যের আধিক্য লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করে, তাই অধিক শর্করা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুণ। ডায়াবেটিক হলে লিভার মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

৩. নিয়মিত ব্যায়াম করুণ। যেমন হাঁটাহাঁটি, সাতার কাটা ও যোগ ব্যায়াম ইত্যাদি।

৪. চর্বির জাতীয় খাবার পরিহার করুণ: রক্তে চর্বির আধিক্য লিভারের রোগের প্রধান কারণ। তাই যথাসাধ্য চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

৫. ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কারণ, উচ্চ রক্তচাপ লিভারের কার্যক্ষমতায় বাধা প্রদান করে।

৬. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কারণ স্থূলতা লিভারে চর্বি জমতে সাহায্য করে। ফ্যাটি লিভারই এখন এ দেশে ক্রনিক লিভার ডিজিজের প্রধান কারণ।
–সূত্র: এভরিডে হেলথ।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

হাড় ক্ষয় করে যে খাবারগুলো!

হাড়

শরীরের হাড় ক্ষয় করে যে ৪ খাবার: শরীরের হাড় মানেই খুব শক্ত তা কিন্তু নয়। বরং মানুষের শরীরের হাড় কিছু কিছু কারণে খুবই নরম বা ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। অস্টিওপোরোসিস হাড়ের রোগের মধ্যে অন্যতম। এই রোগে আক্রান্তদের হাড় ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যেতে থাকে। হাড় ক্ষয়ের জন্য কিছু খাবারও দায়ী থাকে। দেখুন কী কী খাবার আপনার শরীরের হাড় ক্ষয়ের জন্য দায়ী:

১. অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার মানব শরীরের হাড়কে দুর্বল করে দেয়। লবণ অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইড দেহ থেকে ক্যালসিয়াম বের করে দেয়। ফলে হাড় হয়ে যায় ভঙ্গুর বা ক্ষয়িষ্ণু। খাবারে সাথে বাড়তি লবণ খাওয়া ছাড়াও ফাস্ট ফুড, কাচা খাবার, সালাদ কিংবা চিপসে মেশানো লবণ আপনার হাড়ের জন্য মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।

২. একটু ভরপেট খাওয়া হলেই অনেকেই সফট ড্রিংকস বা কোমল পানীয়ের জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। জেনে রাখুন, এই কোমল পানীয় প্রতিনিয়ত হাড় ক্ষয় করে চলেছে। এই সমস্ত কোমল পানীয়ে থাকা ফসফরিক এসিড মানুষের প্রাকৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেহের ক্যালসিয়াম দূর করে দেয়। আর ধীরে ধীরে হাড় হয়ে ওঠে ক্ষয়িষ্ণু।

৩. অনেকেরই চা পানের নেশা থাকে। দিনে এক-দুই কাপ চা শরীরের জন্য তেমন ক্ষতিকর কিছু নয়, বরং উপকারী। এর বেশি হলেই শরীরে অধিক মাত্রায় ক্যাফেইন প্রবেশ করে। যা হাড়ের ক্ষয়ের জন্য দায়ী।

৪. প্রতিদিনের খাবার তালিকায় যাদের মাংস থাকতেই হয় তাঁদের জন্য দুঃসংবাদ হলো, মাংসে থাকা অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে থাকা ক্যালশিয়ামকে কাজ করতে বাধা দেয়।ফলে হাড়ে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি তৈরি হয়। একসময় হাড় হয়ে পড়ে দুর্বল।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

শরীরে ক্যান্সার ডেকে আনে যে ১১টি খাবার!

খাদ্য

সবসময়ই আপনি এই খাবারগুলি খান বা খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু জানেন কি? এই খাবারগুলিই আপনার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এগুলির বেশিরভাগই প্রসেসড ফুড। আর এর ফলেই শরীরে ঢুকছে বিষ। দীর্ঘদিনের জন্য খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে এমন এমন প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।

১) মাইক্রোওয়েভ পপক্রন : ব্যাগে করে বিক্রি হয় অনেক কম্পানির মাইক্রোওয়েভ পপক্রন। যার ফলে শরীরে ঢুকতে পারে পারফ্লুওরুকট্যানোইক অ্যাসিড। যা একটি কার্সিনোজেনিক উপাদান।

২) ক্যানড ফুড : এ ধরনের খাবারে থাকে বাইফেনল-A, সংক্ষেপে BPA। যার প্রভাবে মস্তিষ্কের ভেতর জিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়।

৩) প্রসেসড মিট : নানারকমভাবে মাংসকে প্রসেস করে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের স্ন্যাকস। হটডগ, সসেজ, বেকন, বার্গার। প্রসেসদ মাংসকে সুস্বাদু করার তালে ব্যবহার করা হচ্ছে নানা ধরনের প্রিজারভেটিভ। যা শরীরে ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।

৪) ভেড়িতে চাষ করা মাছ : ভেড়িতে চাষ করা মাছে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি। এত বেশি পরিমাণে ভেড়িতে রাসায়নিক, কীটনাশক ও ওষুধ প্রয়োগ করা হয় যে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক।

৫) পোটাটো চিপস: চিপস খেতে আপনি প্রচণ্ড ভালোবাসেন। ঘরে বাইরে চায়ের সঙ্গে, অফিসে কাজ করতে করতে চিপস না হলে ঠিক চলে না। চিপসের প্রতি এত আসক্তি কিন্তু আপনার যম হয়ে দেখা দিতে পারে। প্রচণ্ড তাপমাত্রায় চিপস যখন ভাজা হয়, তখন তৈরি হয় অ্যাক্রিলামাইড, যা পাওয়া যায় সিগারেটেও। ফলে সিগারেট ও চিপস, দুই-ই একইরকমভাবে কার্সিনোজেনিক।

৬) হাইড্রোজেন অয়েল : বাজারে মুনাফা তোলার তাগিদে সবাই ব্যস্ত কী করে তাদের পণ্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। কী করে পণ্যকে দীর্ঘায়ু করা যায়। কী করেই বা এর স্বাদ আরও বাড়ানো যায়। এই করতে গিয়ে বিভিন্ন ভেজিটেবল অয়েলের সঙ্গে হাইড্রোজেনের বিক্রিয়া ঘটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে হাইড্রোজেনেটেড অয়েল। যা আপনার শরীরের কোষপর্দা (Cell Membrane)-কে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

৭) ময়দা : ময়দায় ক্যান্সার! তাহলে লুচি-পরোটার কী হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রসেসড যেসব ময়দা দেখতে যত ধবধবে সাদা, বিপদ সেখানেই। খুব সাদা করার জন্য ব্যবহার করা হয় ক্লোরিন। যা আপনার রক্তে দ্রুত শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে। আর এই শর্করা ক্যান্সার আক্রান্ত কোষের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।

৮) চিনি : অত্যধিক চিনি কিন্তু শরীরের পক্ষে ভয়ানক ক্ষতিকারক। খুব চিনি খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। যা প্রকান্তরে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ায়।

৯) সুইটনার : এখন বিভিন্ন প্রসেসড ফুডে আপনি পাবেন কৃত্রিম সুইটনার অ্যাসপারটেম। যা ভীষণভাবেই কার্সিনোজেনিক। পরিপাকের সময় অ্যাসপারটেম টক্সিক উপাদান DKP-তে ভেঙে যায়, যার ফলে ব্রেন টিউমারও হতে পারে।

১০) অ্যালকোহল : পরিমিত সীমার মধ্যে মদ্যপান সেভাবে আপনার শরীরের কোনও ক্ষতি করবে না। কিন্তু, আপনি যদি রোজ অত্যধিক হারে মদ্যপান করেন, তবে আপনার কোলন, রেকটাম, মুখ, খাদ্যনালীতে ক্যান্সার এমনকী ব্রেস্ট ক্যান্সারও অবশ্যম্ভাবী।

১১) সোডা : হার্ড ড্রিংকস আপনার না পসন্দ, তাই পার্টিতে সোডা ওয়াটারই আপনার প্রথম পছন্দ। ভাববেন না, এতে আপনার নিশ্চিন্ত হওয়ার কোনও কারণ আছে। কারণ, সোডা ওয়াটারে থাকে সুগার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে থাকে সুইটনারও। আর ক্যান্সারে এদের ভূমিকা, আমরা আগেই আপনাদের জানিয়েছি। এছাড়া কৃত্রিম রং ও ফ্লেভারও অনেক সময় দেওয়া হয় সোডা ওয়াটারে।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

যে খাবারগুলো দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া যাবে না!

খাদ্য

৮টি খাবার দ্বিতীয়বার গরম করে খাবেন না, খেলে মহা বিপদ; ক্যন্সার-এইডস হওয়ার আশঙ্কা।

আমরা সাধারনত বাসায় রান্না করার পরে সময় বাঁচানোর জন্য সেই খাবার আবার পরের দিনের জন্য রেখে দিই, আবার সেই খাবার পুনরায় গরম করেই খাই।

কিন্তু সেই খাবার পুনরায় গরম করে খাওয়া অনেক ক্ষতিকর, এতে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক গুন বেড়ে যায়।

আর আমরা এমন কিছু খাবার আছে যা প্রতিদিন পুনরায় গরম করে খাচ্ছি। এরকম ৮টি খাবারের সম্পর্কে আজ জেনে রাখুন যেগুলো ভুলেও পুনরায় গরম করবেন না:-

১. মাশরুম:- সাধারনত মাশরুমের ফাইবার ও এনজাইম হজমে সহায়তা করে। এটি অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলন-এর পুষ্টি উপাদান শোষণকেও বাড়াতে সাহায্য করে। আর তাই মাশরুম একবার রান্নার পরে দ্বিতীয়বার গরম করে খেলে তা আমাদের পেটের জন্য অনেক ক্ষতিকর।

২. মুরগির মাংস:- অনেকেই সময় বাঁচানোর জন্য একবারেই অনেক মুরগির মাংস রান্না করে রাখি কিন্তু মুরগির মাংস বার বার গরম করে খাওয়া উচিত নয়। কারণ মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। রান্নার পরে ফের তা গরম করলে প্রোটিনের কম্পোজিশন বদলে গিয়ে তা থেকে বদহজম হতে পারে।

৩. চা:- এটা আমরা অনেকেরই জানা যে একবার চা বানানোর পর তা ঠান্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করা উচিত নয়। কারণ চায়ের মধ্যে ট্যানিক অ্যাসিড থাকে। তৈরি করা চা ফের গরম করে পান করলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।

৪. ভাত:- ভাত রান্না করার সময় তাতে বেসিলস সিরিয়াস ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হয়। রান্না করা ভাত ফের গরম করলে এই ব্যাক্টেরিয়া সংখ্যায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়ে ডায়েরিয়া পর্যন্ত হতে পারে।

৫. আলু:- আলু রান্না বা সেদ্ধ করার পরে ঠাণ্ডা হওয়ার সময় তাতে বটুলিজম নামে একটি ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হয়। ফের তা গরম করলে এই ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যাগুলি বেড়ে গিয়ে ফুড পয়জনিং পর্যন্ত হতে পারে।

৬. ডিম:- ডিমের মধ্যেও বেশি পরিমাণে প্রোটিন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টস থাকে। রান্নার পরে আবার তা গরম করলে ডিম থেকে টক্সিন তৈরি হবে যা থেকে বদহজমের আশঙ্কা তৈরি হয়।

৭. পোড়া বা খাবার তেল:- আমরা অনেকেই খাবার রান্নার পর অবশিষ্ট তেল রেখে দেই পরবর্তী কোন খাবার রান্নার জন্য কিন্তু একবার ও কি খেয়াল করেছি এটা আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। পোড়া তেল ফের গরম করে রান্নায় ব্যবহার করলে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

৮. পালং শাক:- এছাড়াও পালং শাকও রান্নার পর পুনরায় গরম করা উচিত নয়। পালং শাকে অতিরিক্ত পরিমাণে নাইট্রেটস থাকে।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

কাঁচা ডিম ফ্রিজে রাখা ক্ষতিকর!

খাদ্য

সুস্থ সবল দেহের জন্য খাদ্যতালিকায় ডিম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু সেই কাঁচা ডিম ফ্রিজে রাখলে মারাত্মক ভুল করা হবে। কেননা ডিমের যাবতীয় গুণ চলে যায় ফ্রিজের ঠাণ্ডায়। সেই ডিম খেলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শরীরে।

সকালে ডিমসিদ্ধ হোক বা দুপুরের খাবারে ঝাল ঝাল ডিমের তরকারি, টিফিনে ডিমের ওমলেট হোক বা এগ চাউমিন- এসব নাম শুনে জিভে জল আসে না, এমন কেউ নেই বললেই চলে। ডিম মানে একটা অন্য ব্যাপার। এটি খেতে যেমন ভালো, শরীরের জন্যও উপকারী। কারণ, শরীরে যাচ্ছে প্রচুর প্রোটিন আর ভিটামিন। বাজার থেকে ডিম আসছে বাড়িতে। তারপর তা ঢুকে যাচ্ছে সোজা ফ্রিজে। দিনের পর দিন কাঁচা ডিম থাকছে ফ্রিজবন্দি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত একটি ডিমে ১৩টি প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকে। এতে ছয় গ্রাম অত্যন্ত উচ্চমাত্রার প্রোটিন থাকে। ডিম যে কোনও মানুষের খাদ্যাভাসের সুষম আহার বলেই বিবেচিত হয়। কিন্তু ফ্রিজে দিনের পর দিন কাঁচা ডিম রাখার রেওয়াজ ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা ডিমের মধ্যে থাকা খাদ্যগুণ নষ্ট করে দেয় ফ্রিজের ঠাণ্ডা। ডিমের মধ্যে বেশ কিছু খনিজ পদার্থ থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। ফ্রিজের ঠাণ্ডা ওই খনিজ পদার্থকে অকেজো করে দেয়। ডিমের মধ্যে থাকা অ্যাক্টিভ এনজাইম যা ঠাণ্ডায় নষ্ট হয়ে যায়। ঠাণ্ডায় ডিম রাখলে তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের প্রবণতা বাড়ে। সেই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। ঠাণ্ডা ডিমের জন্য গ্যাসট্রোএনটেরেটিস ও ফুড পয়জনিংয়ের প্রবণতা বেড়ে যায়।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Wednesday, January 23, 2019

স্বাস্থ্যের মারাত্মক হুমকি "এন্টিবায়োটিক রেজিস্টান্ট"!


আগামী ৫০ বছর পর অকালে মানুষ মারা যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ কি হবে?
যুদ্ধ-বিগ্রহ, দুর্যোগ, এইডস, কলেরা, সোয়াইন ফ্লু....??
মোটেই না। যে কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাবে সেই কারণটা নন মেডিকেল মানুষদের কাছে অদ্ভূত লাগতে পারে। এমনকি কারো কারো কাছে অবিশ্বাস্যও মনে হবে।
এন্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স!
জিনিসটা কি?
আমার আশেপাশে যেহেতু নন মেডিকেল মানুষ বেশি তাই খুব সহজভাবেই ব্যাখা করার চেষ্টা করছি।
তার আগে কয়েকটা পরিচিত দৃশ্যের কথা মনে করিয়ে দিই।
আপনার জ্বর হয়েছে। কিংবা শরীরের কোথাও ব্যথা।
বড় ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার ঔষধ দিল। ব্যথা তিন দিনেও কমে না। তারপরই শুনলেন অমুক ফার্মেসীতে বসা ক্লাস নাইন পাশ অমুক ডাক্তারের ঔষধ খেলেই রোগী ভালো হয়ে যায়। একদিনেই ব্যথা কমে।
আপনি গেলেন এবং তিন চারশ টাকার ঔষধ খেয়ে ভালো হয়ে গেলেন। তারপর পাড়ার বা মোড়ের চায়ের দোকানে বসে ডাক্তারের গোষ্ঠী উদ্ধারবশত আপনি সেই অমুক ডাক্তারের কেরামতির বিজ্ঞাপন দিলেন।
এটাও বলতে ভুললেন না এসব গরু ছাগল ডাক্তারের চেয়ে ফার্মেসীতে বসা অমুক ডাক্তার, তমুক ডাক্তার হাজার গুণ ভালো।
খুবই পরিচিত ঘটনা।
কিন্তু আপনি জানেন না, একদিনে ব্যথা কমাতে গিয়ে আপনি বিষ খেয়ে ফেলেছেন। বিষ না, বিষের চেয়েও ভয়ানক জিনিস।
আপনি মারা যাওয়ার পথে এক পা বাড়িয়ে রেখেছেন।
বাংলাদেশের মানুষ মুখে মুখে বিজ্ঞাপনে চরম বিশ্বাসী। কেরামতি এবং মৌখিক স্বীকৃতিকে মাঝে মাঝে ধর্ম বিশ্বাসের মতোই বিশ্বাস করে বসে। তার উপর "আমি কি কম বুঝি" চিন্তাও একটা বিরাট বড় ফ্যাক্ট।
সামান্য জ্বর হলো। দৌড় দিয়ে ফার্মেসীতে গেলেন। দুইটা প্যারাসিটামল আর দুইটা এন্টিবায়োটিক কিনে হাসিমুখে ফিরে আসলেন।
পেট ব্যথা হলো। আবার ফার্মেসীতে দৌড়। ফার্মেসীওয়ালা দুই প্রজাতির চারটা এন্টিবায়োটিক দিল। ব্যথা সাথে সাথে শেষ। আপনি আকাশ পাতাল খুশি।
অথচ আপনি বুঝতেই পারছেন না, আপনি বিষ খাচ্ছেন। চলে যাচ্ছেন নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে।
পুরোপুরি ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি।
জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধের একমাত্র অস্ত্র হচ্ছে এন্টিবায়োটিক। আপনি সিপ্রো, জিমেক্স নামে যা চিনেন তা কেবল ঔষধ না, আপনার জন্য জীবনযুদ্ধের মহা হাতিয়ার।
কিন্তু এই হাতিয়ারের ব্যবহার বিধি আছে। যে কারো পরামর্শে আপনি হাতিয়ার নিতে পারবেন না। কখন কয়টা গুলি করবেন তারও নিয়ম আছে। শত্রু বুঝে গুলি করতে হবে। করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক। কারণ গুলি সংখ্যা সীমিত।
এন্টিবায়োটিক নির্দিষ্ট কোর্সে খেতে হয়। একটা দুইটা করে নিজের ইচ্ছামতো খেলে আপনার শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। শরীর এই ঔষধে পরিচিত হবে। তারপর আর কাজ করবে না। আবার যে কোন সামান্য অসুখেই ধৈর্য না ধরে যদি আপনার সবচেয়ে বড় গুলিটা ব্যবহার করেন তবে পরে বড় শত্রুকে মারতে গিয়ে কোন উপায় পাবেন না।
কখন কবে কোনটা খাবেন তার একমাত্র সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রাখেন ডাক্তার। ডাক্তার মানে আপনার বাড়ির পাশে তিন তাকের ফার্মেসীতে বসা এইট পাশ অমুক মিয়া না, ডাক্তার মানে কেবল এমবিবিএস, বিডিএস কিংবা যে কোন রেজিস্টার্ড ডাক্তার। এর বাইরে এন্টিবায়োটিক ব্যাপারে কারো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। আমি আবার বলছি, দণ্ডনীয় অপরাধ।
হাঁ, আমাদের দেশে সব আইন মানা হয়না, সম্ভবও হয়না। হাতের কাছেই ডাক্তার পাওয়া যায় না। সে জন্য ফার্মেসীর সাহায্য নিতেই হয়।
কিন্তু এটা বলেই পার পাবেন এমন না। বর্তমানে দেশের অধিকাংশ মানুষ ২০০ টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখানোর ক্ষমতা রাখেন। যারা পারেন না তাদের জন্য সরকারি হাসপাতাল আছে। সেখানে একটু কষ্ট করে দেখান।
রোগ বুঝে ঔষধ দেয়ার জন্য ডাক্তার লাগে না।
আসলেই বেশিরভাগ রোগের ঔষধ মুখে মুখে জানা আছে।
তাহলে এত কষ্ট করে ডাক্তার হওয়ারই বা কি দরকার? টাকা নষ্ট করে ডাক্তারের কাছে যাওয়ারই বা কি দরকার?
আর দরকার আছে।
ডাক্তার কোন রোগে কোন ঔষধ দেয়ার পাশাপাশি কোন সময় কোনটা দেয়া উচিত না এটা জানেন। সাধারণ মানুষ, ফার্মেসী বা কোয়াকরা এটা জানেন না। পার্থক্য আর প্রয়োজনীয়তা এখানেই।
এরপরও নিম্নবিত্ত মানুষকে তাদের ভুলের জন্য ছাড় দেয়া কিন্তু। কিন্তু কোন যুক্তিতেই মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্তদের ছাড় দেয়া যায় না।
এলাকায় গেলে এক ডাক্তার ভাইয়ের চেম্বারে বসে আড্ডা দিই।
একদিন দেখলাম ঐ ভাই এক ফার্মেসীওয়ালার বিরুদ্ধে বিচার বসিয়েছেন। কারণ ঐ লোক প্রেসক্রিপশনের ঔষধ চেঞ্জ কনে ফেলে। কোম্পানী না, ডিরেক্ট গ্রুপ চেঞ্জ।
কি রকম চেঞ্জ একটা উদাহরণ দিই।
একবার এফসিপিএস স্যার এক রোগীকে দুইটা এন্টিবায়োটিক আর একটা ওমিপ্রাজল দিলেন। ফার্মেসীওয়ালা ওমেপ্রাজল বদলে আরেকটা এন্টিবায়োটিক দিল।
তিনটা এন্টিবায়োটিক, ওমিপ্রাজল নেই!
এটা গলা টিপে মারার চেষ্টার চেয়েও ভয়ানক।
ভুল উচ্চবিত্তরাও অনেক সময়েই করে থাকেন।
আমার পরিচিত অনার্স পড়ুয়া এক ছোট বোনের কানে ব্যথা। আমি পরের দিনই ইএনটি ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দিলেন। উচ্চশিক্ষিত আঙ্কেল ঘটনা শুনলেন এবং দৌড় মেরে উনার পরিচিত ফার্মেসীতে চলে গেলেন। ফার্মেসীতে বসে চা খেয়ে তিনটা এন্টিবায়োটিক আর একটা পেইন কিলার সমেত ৮০০ টাকার ঔষধ নিয়ে ফিরলেন।
ব্যথা একদিনেই উড়ে চলে গেল।
তবে সমস্যা রোগীর শরীর দুর্বল হয়ে গেছে। খেতেও পারছে না।
ঔষধের নাম শুনে আমি সাথে সাথে ডাক্তার দেখানোর জন্য বললাম। স্যার বকাবকি করে দুইটা এন্টিবায়োটিক কমিয়ে দিলেন। ৪০০ টাকা ভিজিটের সাথে ১৫০ টাকার ঔষধ। টোটাল ৫৫০ টাকা।
অথচ ফার্মেসীতে গিয়ে ডাক্তারের ৪০০ টাকা বাঁচানোর জন্য উল্টো আরো ২৫০ টাকা বেশি দিতে হলো।
এই ঘটনা কিন্তু বারবার ঘটে।
যে রোগে ডাক্তার সর্বোচ্চ ২০০ টাকার ঔষধ দিতেন সেখানে ৪০০-৫০০ টাকা বাঁচানোর জন্য মানুষ ফার্মেসী থেকে ১০০০ টাকার বিষ কিনে নিয়ে আসে।
আরেকটা ঘটনা। প্রায় ১০ বছর আগের।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ভাই কোয়াক ডেন্টিস্টের কাছে গেলেন। বিডিএস বিহীন ডেন্টিস্ট। কোয়াক চোখ বন্ধ করে দাঁত তুলল। তারপর একটা এন্টিবায়োটিক আর একটা পেইন কিলার দিল। কোন ওমিপ্রাজল নেই। এমনকি পেইন কিলার যে খালি পেটে খাওয়া যায় না সেটাও বলে দিল না।
গভীর রাতে ব্যথা শুরু হলে ভাই পেইন কিলার খেলেন। খালি পেটেই। দুই তিন পর পেট ফুলে গেল। অহস্য যন্ত্রণা নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হলেন!
এরকম কেস স্ট্যাডি হাজারটা।
আপনিও প্রত্যক্ষ করেছেন, জানেন কিংবা শুনেছেন।
একদম সিরিয়াসলিই আমরা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছি।
মুড়ির মতো যখন তখন এন্টিবায়োটিক খাওয়া আমাদেরকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদের কোন ধারণা নেই।
একটা তথ্যই জেনে রাখুন, এই এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের কারণেই প্রতি বছর সাত লাখ মানুষ মারা যায়।
৭ লাখ কিন্তু...
তিন বছর আগে আমার ভাইরাল জ্বর হলো। ৭ দিন পরও জ্বর না কমার কারণে আমাদের মেডিসিন আরপি স্যারকে বললাম, স্যার এন্টিবায়োটিক দেন, প্লিজ। কেবল প্যারাসিটামল খেয়ে কমছে না।
স্যার বললেন, চড় দেব? সাহস কম না, আমার কাছে এন্টিবায়োটিক চায়!
সেদিন কথাটা শুনে যতটা খারাপ লেগেছিল আজকে সেই কথার প্রয়োজনীয়তা তত বেশি বুঝতে পারছি।
আরেকজন স্যারকে সে দিন শুনলাম বারবার আফসোস করে বলছেন "সিপ্রো এত সুন্দর একটা ঔষধ। কিন্তু মানুষ নষ্ট করে দিল। এত ভালো একটা ঔষধ। ইস!
স্কুল পালিয়ে ১০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে দুই তাকের একটা ফার্মেসী খোলা ছেলে কেবল "এন্টিবায়োটিক" নামের বিষ বিক্রি করে পুরো ফ্যামেলী চালাতে পারে।
খেয়াল করেছেন এটা?
সব ব্যবসাতে মার খাওয়ার সিস্টেম থাকলেও ফার্মেসী ব্যবসায় কেউ মার খায় না। একমাত্র কারণ এন্টিবায়োটিক বিক্রি।
ঔষধ বিক্রি মহান ব্যবসা। আমি ফার্মেসীওয়ালা খাটো করছি না বা অসম্মানও করছি না। ঔষধ জীবনদায়ী।
কিন্তু আমাদের অজ্ঞতা আর ফার্মেসীওয়ালাদের লোভ সাথে কোয়াক ডাক্তারদের যা খুশি করার কারণে জাতি মহাবিপর্যয়ের দিকেই যাচ্ছে।
আর হাঁ, কেবল ফার্মেসী বা কোয়াকদের দায় দিয়েই শেষ না। কিছু ডাক্তারেরও প্রবলভাবে এন্টিবায়োটিক প্রীতি আছে। এন্টিবায়োটিক দিলে ব্যথা কমে, রোগ কমে। ডাক্তারের যশ বাড়ে। আবার কোম্পানী থেকে খানিকটা সুবিধা তো আছেই।
অস্বীকার করার উপায় নেই।
বর্তমানে যে কোন ডাক্তারই আমার সিনিয়র। তাঁদের বলার যোগ্যতা বা সাহস রাখি না। আশা করব যার যার অবস্থানে আমার সবাই সৎ থাকার চেষ্টা করব।
আপনি শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। যে রোগ ৩০ টাকা দামের দুইটা ট্যাবলেটেই কমে সেটাই আপনার জন্য মরণব্যাধী। কোন ঔষধ তখন কাজ করছে না। সেই মুহুর্তে পৃথিবীর সব ডাক্তার না, সব হাসপাতাল গিলিয়ে খাওয়ালেও আপনি ভালো হবেন না। খুব সহজেই ধীরে ধীরে মারা যাবেন। আপনার কোন দোষ না, বদঅভ্যাস না..সামান্য অজ্ঞতার কারণেই...
ভয় লাগে না?
চলছে এন্টিবায়োটিক সপ্তাহ। মানবজাতির সামনে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ। স্বাভাবিক কারণেই বাঙালী জাতির চ্যালেঞ্জ আরো বড়।
এতবড় পোস্ট দিয়ে আপনাকে কতটা ভাবাতে পারলাম জানি না। সমস্যা নীরব, বিষের প্রভাব ধীর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মারা যাওয়ার কারণ অাজানা থাকার কারণে কারো কোন মাথা ব্যথা সৃষ্টির প্রয়োজন পড়ে না।
তারপরও আপনার হাতে ধরে পায়ে পড়ে করা অনুরোধ...কোন স্বীকৃত ডাক্তার ছাড়া কারো কাছ থেকে এন্টিবায়োটিক নেবেন না। নিজে নিজে এন্টিবায়োটিক কিনতে যাবেন না। কোর্স শেষ না করে খাওয়া বন্ধ করবেন না।
আর দয়া করে এমবিবিএস, বিডিএস... ডিগ্রি ছাড়া কারো বিরাট বড়বড় ডিগ্রি দেখে বিভ্রান্ত হবেন না।
এর বাইরে যত বড় বড় অজানা অচেনা ডিগ্রি, তত বড় টাউট।
বাঁচতে হলে জানতে হবে, মানতেও হবে। না মানার আর কোন সুযোগ নেই।
মানছেন তো?

আমি এন্টিবায়োটিক সচেতন।
লেখা: জয়নাল আবেদীন
("সাদা এপ্রোন" পেজ থেকে সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness